জার্মানিতে ইরানের সব কনস্যুলেট বন্ধের ঘোষণা

| আপডেট :  ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৩  | প্রকাশিত :  ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৩

জার্মান সরকার ইরানের সব কনস্যুলেট বা বাণিজ্য দূতাবাস বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালিনা বেয়ারবক এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। খবর এএফপির।

এদিকে হঠাৎ সব কনস্যুলেট বন্ধ ঘোষণার পেছনে রয়েছে ইরানি বংশোদ্ভূত জার্মান নাগরিক জামশিদ শারমাহদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ঘটনা। জামশিদকে ইরানের ইসলামপন্থি শাসকদের উৎখাতের ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে দেশটি, যদিও জামশিদ সবসময় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে জার্মান দেশটি তাদের কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে জামশিদের মৃত্যুদণ্ড রোধ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তেহরান তা উপেক্ষা করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেয়ারবক বলেন, আমরা বারবার তেহরানকে সতর্ক করেছি যে জামশিদ শারমাহদের মৃত্যুদণ্ডের ফলাফল গুরুতর হবে; কিন্তু তারা কর্ণপাত করেনি। তাই আমাদের এ পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে। জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট, মিউনিখ এবং হামবুর্গে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটগুলো এখন থেকে বন্ধ থাকবে। 

অপরদিকে জামশিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার কয়েক দিন আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘশি জার্মানির প্রতি একটি বার্তা পাঠিয়ে বলেন, ‘জামশিদ একজন সন্ত্রাসী এবং তার নেতৃত্বে হওয়া হামলায় ১৪ জন নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। তার অপরাধের জন্য তাকে শাস্তি পেতেই হবে এবং জার্মানির পাসপোর্ট তার দায়মুক্তির জন্য যথেষ্ট নয়।’

প্রসঙ্গক্রমে, জামশিদ শারমাহদ, যিনি ২০০৩ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন, তাকে ইরানে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা এবং সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, তিনি ২০০৮ সালে ইরানের শিরাজ শহরের একটি মসজিদে হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, যেখানে অনেক নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু হয়। জামশিদ এই সব অভিযোগ বরাবর অস্বীকার করেছেন।

২০১৯ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী তাকে অপহরণ করে। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর, ইরানের নিম্ন আদালত ফেব্রুয়ারিতে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, যা পরে উচ্চ আদালতেও বহাল থাকে। অবশেষে, গত বুধবার তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

এই ঘটনার ফলে জার্মানি ও ইরানের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি দুই দেশের সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

উল্লেখ্য, কনস্যুলেট হলো বিদেশে একটি সরকারি অফিস, যা দেশের স্বার্থ রক্ষা করে। এটি নাগরিকদের সাহায্য, ভিসা প্রদান ও প্রশাসনিক কাজ করে এবং সাধারণত শহর বা অঞ্চলে, যেখানে দূতাবাস নেই সেখানে স্থাপন করা হয়।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত