হাসনাত-সারজিসকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় ঢাবিতে বিক্ষোভ

| আপডেট :  ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০১  | প্রকাশিত :  ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০১

চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জেয়ারত শেষে ফেরার পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে প্লাটফর্মটি।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমবেত হয়ে এক সমাবেশের আয়োজন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

এসময় তাদেরকে ভারত, আওয়ামী লীগ ও ইসকনবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়। এর আগে, রাত পৌনে ১১টা থেকেই তারা জড়ো হতে থাকেন।

সমাবেশে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, বাংলাদেশের হিন্দুদেরকে হিন্দুত্ববাদী প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। গত ১৫ বছরে সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণে যারা জড়িত তাদের যথাযথ বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের কূটনীতি, বাংলাদেশের ক্ষমতা কাঠামোকে দিল্লির প্রভাব মুক্ত করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ দিল্লী বা ওয়াশিংটনের গোলাম নয়, বাংলাদেশের মানুষ স্লোগানে স্লোগানে জানিয়ে দিয়েছে, দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মূখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, বাংলাদেশ, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ আমার দেশের মাটির প্রতিটি ধূলিকণা নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এদেশের মাটি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যারা যুদ্ধ করছে, তাদেরকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যারা দেশের মানচিত্র ও পতাকাকে সমুন্নত রাখার সংগ্রামে লিপ্ত তাদেরকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। চব্বিশের ভীত বাংলাদেশের মাটি থেকে মুছে দিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর ষড়যন্ত্রকারীরা আবার আঘাত হানতে পারবে বলে মনে করলে তারা সবচেয়ে বড় ভুল করবে। তারা ভাবছে সারজিস-হাসনাতদেরকে সরিয়ে দিলেই এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আর টিকে থাকবেনা। কিন্তু তাদের মাথায় রাখা উচিত যে, সারজিস, হাসনাত, হান্নান মাসুদ ও আখতারদেরকে সরিয়ে দিলে হাজারো সারজিস, হাসনাত, আখতার তৈরি হবে।

তিনি বলেন, দিল্লির মনে রাখা উচিত, এই স্বাধীন বাংলাদেশে তাদের গোলাম শেখ হাসিনাকে সর্বশক্তি দিয়েও টিকিয়ে রাখতে পারেনি। এদেশে বীর লড়াকু হিসেবে শুধু হাসনাত, সারজিসরাই নয়, বরং রিক্সাচালক, কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, আইনজীবী, ডাক্তার প্রত্যেকেই একেকটা যোদ্ধা। এদেশের কৃষি খামারের একজন কর্মচারী থেকে শুরু করে সচিবালয়ের সচিব পর্যন্ত কেউই দিল্লির শাসন বরদাস্ত করবে না। দিল্লির দালালিকে বরদাস্ত করার মতো আর এদেশে কেউ নেই।

হান্নান মাসুদ আরও বলেন, চিন্ময় দাসকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তখন দিল্লির মসনদ কেঁপে উঠেছে। যারা চিন্ময়ের পক্ষে দালালি করছে তারাই একে একে এদেশের বিপ্লবীদেরকে টার্গেট করছে। আমরা বলে দিতে চাই, চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে আমরা সকলে শহীদ হয়ে গিয়েছি। প্রতিটি মুহূর্তই আমাদের জন্য বোনাস টাইম। আমরা যেকোনো সময় এ দেশের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত রয়েছি।

এর আগে, বুধবার সন্ত্রাসী হামলায় নিহত অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জেয়ারত শেষে ফেরার পথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাসনাত ও সারজিসের গাড়িকে ট্রাকচাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পর পরই আব্দুল হান্নান মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাইয়ের কবর জেয়ারত করে ফেরার পথে আনুমানিক সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে চট্রগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজী রাস্তার মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সার্জিস আলমের গাড়ি বহরে ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যা চেষ্টা করা হয়।

পাশাপাশি তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ড্রাইভার ময়মনসিংহ থেকে কক্সবাজারে মালামাল খালাস করে আসার কথা বললেও মাল খালাসের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অতীতে ভারতীয় ‘র’ কর্তৃক বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় অনেক ব্যক্তিকে হত্যা করার নজির রয়েছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত