সাংবাদিককে মারধর করার অভিযোগে বিএনপি নেতা বহিষ্কার
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিক মিনহাজ আমানকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিক মিনহাজ আমানকে প্রকাশ্যে শারীরিকভাবে আঘাত ও লাঞ্ছিত করার ঘৃণ্য অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
জানা গেছে, অভিযুক্ত মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন।
এ বিষয়ে সাংবাদিক মিনহাজ আমান ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘সাবেক কাউন্সিলর ইকবাল আমাকে ফোন করে ক্ষমা চেয়েছে। বাসায় আসতে চাচ্ছে- আমি না করে দিয়েছি। তিনি (ইকবাল) বলতে চাচ্ছেন, আমার পরিচয় দেওয়ার দরকার ছিল। তবে তাকে আমি বলেছি আপনার লোক আপনারই সামনে একজন সাধারণ নাগরিকের গায়ে হাত দিয়েছে, যে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। কোন পরিচয়ের ইস্যু এটা না। এবং দল হিসেবে বিএনপির কি ক্ষতি হচ্ছে সেটাও তার বুঝা উচিত।
তিনি আরও লিখেছেন, তবে অবশেষে আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু সেই রক্তাক্ত ড্রাইভারের বা সেই ভাঙা বাস মালিকের কী হবে, সে ব্যাপারে আমার জানা নেই।
এর আগে, শুক্রবার দুপুরে আসিয়ান পরিবহনের একটি বাসে চালক নয়নের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় ইকবালের। পরে বাসটি নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় গেলে ইকবালের অনুসারীরা বাসচালককে মারধর ও বাসে ভাঙচুর চালায়। এ সময় সাংবাদিক মিনহাজ আমান বাস ভাঙার প্রতিবাদ করলে তাকেও লাঞ্ছিত করেন ইকবালের অনুসারীরা।
আহত চালক নয়ন বলেন, ‘আমি গুলিস্থান থেকে গাড়ি চালিয়ে আসছিলাম। সায়েদাবাদে জ্যাম থাকার সময় গাড়ির সামনে একটি মোটরসাইকেল এসে থামে। দ্রুত ব্রেক করায় গাড়ির যাত্রীদের ঝাকি লাগে। এসময় সেই নেতা বলে কিরে কেমনে গাড়ি চালাস? এনিয়ে তর্ক হলে সে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। গাড়ি সানারপাড় আসার পর ২৫ থেকে ৩০ জন কর্মী এসে আমার গাড়ি ভাঙচুর করে ও আমাকে বেধড়ক মারধর করে। আমার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে ও গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়। পরে তার কাছে মাফ চেয়ে আমি নিস্তার পেয়েছি। বিষয়টা মালিক পক্ষকে জানিয়েছি। তারা যেটা বলবে সেটাই করবে।’
হামলার বিষয়ে বহিষ্কৃত নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, বাসের চালক আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। বাস চালক এলোমেলোভাবে গাড়ি চালাচ্ছিল। এতে আমি তাকে ঠিকভাবে গাড়ি চালাতে বলায় সে আমাকে উল্টো কথা শুনিয়ে দিয়েছে। সে আমকে বলে, ‘আপনি ভালোভাবে গাড়ি চালান।’ পরে সাইনবোর্ড এলাকার এদিকে আসলে আমি তাকে দেখে নেওয়ার কথা বলেছি। ওই সময় আমি তাকে আটকে কান ধরিয়ে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সাধারণ পাবলিক তো আর এটা বুঝে না। তবে তিনি কাউকে মারধর করেননি বলে জানান।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত