বিএসএফের কাছ থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার উদ্ধার করল বিজিবি

| আপডেট :  ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২৩  | প্রকাশিত :  ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:২৩

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় ভারতের রোনঘাট বিএসএফের দখল থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার কোদলা নদীর অংশবিশেষ উদ্ধার করেছে বিজিবি। এতদিন কোদলা নদীর বাংলাদেশ সীমান্তের এ এলাকাটি ভারতের বিএসএফ দখল করে সেখানে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল।

সোমবার (০৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় মহেশপুর-৫৮ বিজিবি।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, কোদালিয়া নদী বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রসারিত হয়ে মহেশপুরের মাটিলা এলাকায় ৪ দশমিক ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চিহ্নিত করেছে। ১৯৬১ সালে প্রণীত বাংলাদেশ-ভারত (স্টিপ ম্যাপ সিট নম্বর-৫১) মানচিত্র অনুসারে কোদলা নদীর উল্লিখিত ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার নদী সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সীমান্তের শূন্য রেখার অভ্যন্তরে অবস্থিত। 

মহেশপুরের যাদবপুর ইউনিয়নের মাটিলা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মহিউদ্দীন জানান, এক সময় এ নদী থেকে প্রচুর মাছ আহরণ করা হতো। স্বাধীনতার পর কোদালিয়া নদী পাড়ের মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে বাংলাদেশের দেশের আরও অভ্যন্তরে বসবাস শুরু করলে কোদলা নদীর বাংলাদেশ অংশটুকু ভারতের বিএসএফ দখল করে নেয় এবং সেখানে আধিপত্য বিস্তার করে। ফলে কৃষকরা মাঠে চাষাবাদ ও নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারতো না। 

তিনি জানান, নদীর বাংলাদেশ অংশে গেলেই বিএসএফ বাধা দিত। এতে নদীটি ব্যবহার করা নিয়ে মাটিলা গ্রামের মানুষের সঙ্গে ভারতের সীমান্তরক্ষী বিএসএফের সঙ্গে বাদানুবাদ হতো। সম্প্রতি কোদালিয়া নদীর প্রকৃত মালিকানা সংক্রান্ত এই বিষয়টি ৫৮ বিজিবির নজরে আসলে বিজিবি প্রথমে বিভিন্ন নথিপত্র, স্থানীয় প্রশাসন ও মানচিত্র থেকে নদীটির প্রকৃত অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত করে বিএসএফের অবৈধ আধিপত্য বিস্তারের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ৫৮ বিজিবি সদস্যরা সাহসিকতা ও পেশাদারত্বের সাথে কোদালিয়া নদী নিজেদের আয়ত্তে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমানে বিজিবি সদস্যরা প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধির পাশাপাশি এলাকার জন্য যন্ত্রচালিত বোট এবং নদীর পাড়ে দ্রুত টহলের জন্য অল ট্যারেইন ভেহিক্যাল (এটিভি) বরাদ্দ করা হয়েছে।

এদিকে ভারতের কবল থেকে ৫ কিলোমিটার নদী উদ্ধারের পর সোমবার দুপুরে মহেশপুর ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মো. আজিজুস শহিদ স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। স্থানীয় জনসাধারণ এ সময় বিজিবিকে বর্তমানে কোদালিয়া নদীতে নির্বিঘ্নে তারা যেতে পারছেন বলে জানান। 

অন্যদিকে নদী উদ্ধারে বিজিবিকে সহায়তার জন্য বিজিবি কর্মকর্তারা জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান। নদীর প্রকৃত অবস্থান এবং মালিকানা সম্পর্কে পরবর্তী প্রজন্মকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন। সেই সঙ্গে নদীর বাংলাদেশ অংশে প্রয়োজনীয় সেচ এবং চাষাবাদ জারি রাখার জন্য গ্রামবাসীকে বিজিবি অনুরোধ করে। এক্ষেত্রে কখনও কোনো ধরনের বাধার সৃষ্টি হলে তা সঙ্গে সঙ্গে বিজিবিকে জানানোর জন্যও গ্রামবাসীর প্রতি বিজিবি সদস্যদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত