যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে কোরআন খতম, বন্দিদের মাঝে উপহার বিতরণ

| আপডেট :  ২৯ মার্চ ২০২৫, ১২:৪১  | প্রকাশিত :  ২৯ মার্চ ২০২৫, ১২:৪১

পবিত্র রমজান মাসে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি অনন্য উদ্যোগে মহিলা ও পুরুষ বন্দিরা সম্মিলিতভাবে মোট ১৬০টি কোরআন খতম করেছেন। এ উপলক্ষে কারাগারে একটি বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে বন্দিদের মধ্যে যারা কুরআন খতম করেছেন তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়। এ সময় সব বন্দিদের ঈদ উপহার এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় দোয়া-মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) অত্যন্ত ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে কারাগারের ভেতর মনোরম পরিবেশে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজহারুল ইসলাম। আর সভাপতিত্ব করেন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার নূরশেদ আহমেদ ভুঁইয়া। এ সময় ও জেলারসহ আরও অনেক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। 

কোরআন খতম উপলক্ষে আয়োজন করা এ দোয়া-মোনাজাতে বন্দিরা একাত্ম হয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন। তারা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে বিশেষ দোয়া পরিচালনার জন্য অনুরোধ করেন, যা তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করেন। একইভাবে সিনিয়র জেল সুপারও নামাজ শেষে বন্দিদের নিয়ে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেন। দোয়া-মোনাজাতে বাংলাদেশের শান্তি, দেশের জনগণের মঙ্গল, বন্দিদের সন্তান-পরিজনের উন্নতি এবং কারা কর্মকর্তাদের সুস্বাস্থ্য ও মঙ্গল কামনা করা হয়।

অনুষ্ঠানে কোরআন খতমকারীদের বিশেষ পুরস্কার হিসেবে মহিলা বন্দিদের শাড়ি, থ্রি-পিস, এবং তাজবীহ দেওয়া হয়। 

এ ছাড়া কুরআন খতমকারী পুরুষ বন্দিদের লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, টুপি, এবং তাজবীহ প্রদান করা হয়। সেলের ভেতরে যারা কোরআন খতম করেছেন তাদের জন্যও বিশেষ উপহার বরাদ্দ করা হয়।

এ বছর কারাগারের ১,২৫০ জন পুরুষ বন্দিকে লুঙ্গি এবং ৬৭ জন মহিলা বন্দিকে শাড়ি ও থ্রি-পিস উপহার দেওয়া হয়েছে। কারা কর্তৃপক্ষের এ উদ্যোগ বন্দিদের মনে এক আনন্দঘন মুহূর্ত সৃষ্টি করেছে এবং তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।

যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেলসুপার নূরশেদ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন বন্দিদের মধ্যে ধর্মীয় চেতনা ও নৈতিকতা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোরআন খতমের মাধ্যমে তারা তাদের জীবনের মানসিক প্রশান্তি এবং আধ্যাত্মিক উন্নয়ন লাভ করেছেন। এতে তাদের জীবনধারায় একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে বলে আমরা আশা করছি।’

তিনি বলেন, ‘কারা অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক, অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও কারা উপ-মহাপরিদর্শকের সার্বিক দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। 

বন্দিদের কাছ থেকে জানতে চাইলে তারা বলেন, কারাগারের ভেতরের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ রাখতে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কোরআন খতমকারী বন্দিরা এ আয়োজনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতে আরও এমন আয়োজনের আকাঙ্ক্ষা জানিয়েছেন।

সুশীল সমাজের দাবি, যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের এ উদ্যোগ শুধু বন্দিদের জন্যই নয়, বরং সমাজের জন্যও একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ধর্মীয় এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এমন উদ্যোগ ভবিষ্যতে কারাগারের পরিবেশ আরো উন্নত করতে সহায়তা করবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত