রাজশাহীতে ঐতিহাসিক ‘সান্তাল হুল’ দিবস উদযাপন

| আপডেট :  ৩০ জুন ২০২৫, ১১:২৭  | প্রকাশিত :  ৩০ জুন ২০২৫, ১১:২৭

‘যেখানে অধিকার বঞ্চনা, সেখানেই হুল’—এ স্লোগানকে সামনে রেখে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাটে পালিত হয়েছে ঐতিহাসিক ১৭০তম সান্তাল হুল দিবস। সোমবার (৩০ জুন) বেসরকারি সংস্থা সিসিবিভিও, রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটি এবং স্থানীয় গ্রাম সংগঠনগুলোর আয়োজনে দিনটি উদযাপন করা হয়।

এ উপলক্ষে সকালে রক্ষাগোলা সংগঠনের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। সিসিবিভিও শাখা কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি কাঁকনহাট বাজার প্রদক্ষিণ করে পৌরসভার শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন সিসিবিভিওর সমন্বয়কারী আরিফ ইথার, রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটির নেতা সুমিতা হাঁসদা, মলিন মার্ডী, বাপ্পি মার্ডী, মুকুল সরেন, রঞ্জিত রায় প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ১৭০ বছর ধরে সান্তাল হুল দিবস সাঁওতালদের কাছে নিজেদের অধিকার ও মর্যাদা আদায়ের গৌরবোজ্জ্বল এক স্মারক; কিন্তু এখনো এই জনগোষ্ঠী শোষণ ও বঞ্চনার শিকার। ভূমির অধিকার বা সমতলের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানান তারা।

সান্তাল হুলের ইতিহাস তুলে ধরে বক্তারা বলেন, ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন শুরু হওয়া সাঁওতাল বিদ্রোহ ছিল উপমহাদেশের প্রথম সশস্ত্র গণআন্দোলন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ, তাদের দেশীয় দালাল জমিদার, সুদখোর ও পুলিশ বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সেদিন রুখে দাঁড়িয়েছিলেন সিধু, কানু, চাঁদ ও ভৈরব নামের চার ভাই। তাদের সঙ্গে ছিলেন দুই বোন ফুলোমনি ও ঝালোমনি মুরমু। প্রায় ১০ হাজার সাঁওতাল যোদ্ধা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন এ যুদ্ধে। পরে পর্যায়ক্রমে চার নেতা নিহত হলে বিদ্রোহের সমাপ্তি ঘটে।

বক্তারা বলেন, ঐতিহাসিক এ আত্মত্যাগ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের পাথেয় হয়ে উঠেছিল। তাই অনেক সাঁওতাল এ দিনটিকে ‘সিধু-কানু দিবস’ হিসেবেও পালন করেন। সেই বিদ্রোহ আজও সাঁওতালদের পথ দেখায়। তারা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য টিকে থাকেন।

এ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সিসিবিভিওর প্রশিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা সৌমিক ডুমরী এবং সমাজ সংগঠক মানিক এক্কা। সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ঊর্ধ্বতন মাঠ কর্মকর্তা নিরাবুল ইসলাম।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত