নিউমুরিং টার্মিনাল ৬ মাসের জন্য পাচ্ছে নৌবাহিনী : নৌপরিবহন উপদেষ্টা
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনায় সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। আগামী ছয় মাস বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। তবে দীর্ঘমেয়াদে দুবাইভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ডকে বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে।
বুধবার (২ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের থেকে যেটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, ফাইন্যান্সিয়াল অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দর বিধি মোতাবেক প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো সময় অপারেটর নিয়োগ করতে পারবে, অপারেটরের সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে।
প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এম সাখাওয়াত বলেন, আমাদের সঙ্গে সাইফ পাওয়ার টেক অনেকগুলো বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছিল। তাদের চুক্তির মেয়াদ শেষে আমরা ছয় মাস বাড়িয়েছিলাম। সেই ছয় মাস শেষ হবে আগামী ৭ জুলাই। আমরা তাদের আর মেয়াদ বাড়াচ্ছি না।
তিনি বলেন, বন্দর এখন নিজেই পরিচালনা করবে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সমস্যা হবে। বন্দরের যে অন্যান্য কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কারণ লোক তো একই। এসব বিবেচনা করে আমরা এত দিন মিটিং করলাম। এখন বন্দরকে অথরাইজ করা হয়েছে বিধিবিধান এবং অর্থনৈতিক সুবিধা বিবেচনা করে তারা ছয় মাস বা এর বেশি সময়ের জন্য অপারেটর নিয়োগ করতে পারবে।
নৌ উপদেষ্টা আরও বলেন, বন্দরের এরিয়ায় নৌবাহিনীর ডকইয়ার্ড রয়েছে। সেটি তারা বন্দরের মধ্যেই সম্প্রসারণ করছে। নৌবাহিনী বন্দর পরিচালনার জন্য বেশি অভিজ্ঞ। তাদের অপারেটর আছে। এখন একটা চিঠি দিয়ে বন্দর পরিচালনার জন্য নৌবাহিনীর সঙ্গে বন্দরের (চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ) একটি চুক্তি হবে।
উপদেষ্টা বলেন, সাইফ পাওয়ার টেক ১৬ থেকে ১৭ বছর বন্দরে কাজ করছিল। তাদের সহযোগিতা যাতে নৌ-বাহিনী পায়, সে জন্য তারা কাজ করবেন বলে আমাকে বলেছেন।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বন্দর পরিচালনার দায়িত্বে যেই আসুক না কেন বন্দরের কারও চাকরি যাচ্ছে না। যে যেই পদে ছিলেন সেই পদেই কাজ করবেন। কাউকে বাদ দেওয়া হবে না। আশা করি সবাই সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করবেন।
ছয় মাস পর বিদেশি কোম্পানিকে চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, আছে, আপনারা সবাই জানেন। এখনো এ বিষয়ে বিস্তারিত বলার সময় আসেনি।
নৌ উপদেষ্টা বলেন, বন্দর পরিচালনার জন্য আমি কি অন্য কোনো অপারেটরকে দিতে পারব না? বাইরের কোনো লোক, আন্তর্জাতিক কোনো কোম্পানি যদি আসতে চায় বিনিয়োগ করতে চায়, তাহলে কি তাকে আমি দিতে পারব না? এতে কি পোর্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে? পোর্টের দায়িত্ব তো কোর্ট অথরিটির কাছেই আছে।
তিনি আরও বলেন, আজ আমি নৌবাহিনীকে দিলাম, নৌবাহিনী না থাকলে পরে আমাকে আরেকজনকে দিতে হবে। তবে দেওয়ার ক্ষেত্রে আমি দেখব আমার সুবিধা হচ্ছে কি হচ্ছে না। যদি দেখি সুবিধা হচ্ছে, এটার মধ্যে আগের সরকার কি করেছে সেটা ভুলে যান। আমি পরিষ্কার করে বলি, এখনো আলোচনা চলছে। আমার ওপরেও কিন্তু একটা নেগোসিয়েশন চলছে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা আরও বলেন, আমাদের ক্ষতি হয় এমন কোন চুক্তি হবে না। আমি যদি এখানে বসে থাকতে থাকতে চুক্তি হয়। অনেকের অনেক রকম সন্দেহ আছে। তাদের (ডিপি ওয়ার্ল্ড) বলেছি, যদি তোমাদের লোক প্রয়োজন হয় তবে তোমরা উপমহাদেশ থেকে কোন লোক নিতে পারবে না। লোক নিতে হলে বাংলাদেশ থেকে, নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিতে হবে।
ডিপি ওয়ার্ল্ডের বিষয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন, দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে তারা একটা বড় বিনিয়োগ নিয়ে আসছে। তারা বর্তমানে ৮৫টি আন্তর্জাতিক বন্দর পরিচালনা করছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত