‘ছেলেকে সবসময় আইনস্টাইন বলে ডাকতাম’

| আপডেট :  ২২ জুলাই ২০২৫, ১০:৪১  | প্রকাশিত :  ২২ জুলাই ২০২৫, ১০:৪১

‘আমার ছেলে খুবই ব্রিলিয়ান্ট ছিল। ক্লাসে সে প্রথম হতো। এত সুন্দর, এত স্মার্ট ছিল। আমার ছেলেরে আমি সবসময় আইনস্টাইন বলে ডাকতাম। আমি তো কখনো দুষ্টুমি করেও মিথ্যা কথা বলিনি। আমার সঙ্গে কেন এমন হলো।’

দাফনের জন্য ছেলের লাশ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামে নিয়ে স্থানীয় বন্ধুদের জড়িয়ে এভাবেই বিলাপ করছিলেন শায়ানের বাবা। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির মেধাবী ছাত্র ছিল শায়ান ইউসুফ (১৪)। তার বাবা এএফএম ইউসুফ মাইলস্টোন কলেজ শাখার রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও মা শামীমা শাম্মী মাইলস্টোন স্কুল শাখার রসায়নের শিক্ষক।

সোমবার (২১ জুলাই) বিমান দুর্ঘটনার পর রাত সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শায়ান। শায়ান লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের বশিকপুর গ্রামের পাল বাড়ির সন্তান। 

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে জানাজা শেষে তার দাদা ডা. মাকসুদুর রহমানের কবরের পাশে শায়ানকে দাফন করা হয়েছে।

ঝলসানো শরীর ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে দুর্ঘটনাস্থল থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসা শিক্ষার্থীটি শায়ান বলে জানিয়েছেন তার চাচা মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ঝলসানো শরীর ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে শায়ান ঘটনাস্থল থেকে নিজেই বের হয়ে আসে। পরে তার বাবা-মা শনাক্ত করেছে। সে-ই প্রথম বের হয়ে এসেছে ভিডিওতে দেখেছি। 

সরেজমিনে বশিকপুরের ওই বাড়িতে দেখা যায়, দুপুর পৌনে ১টার দিকে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি শায়ানের মরদেহ নিয়ে পৌঁছায়। এ সময় বিভিন্ন নামে ডেকে ডেকে নাতি শায়ানের জন্য বিলাপ করছেন তার দাদি। বাড়ির উঠানে জড়ো হন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।

শায়ানের বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রতিবেশী মিজানুর রহমান বলেন, একমাত্র ছেলেকে নিয়ে আমার বন্ধুর স্বপ্ন ছিল অনেক বড়। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে শায়ানকে আমেরিকায় পাঠানোর স্বপ্ন ছিল পরিবারের। সেই স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত