৩০ বছর ধরে হিমায়িত ভ্রূণ থেকে জন্ম নিল মার্কিন শিশু

| আপডেট :  ০১ আগস্ট ২০২৫, ০৪:১৩  | প্রকাশিত :  ০১ আগস্ট ২০২৫, ০৪:১৩

যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে এক দম্পতির ঘরে জন্ম নিয়েছে এক শিশু। অবাক করা বিষয় হলো শিশুটির ভ্রূণ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে হিমায়িত অবস্থায় সংরক্ষিত ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এটাই সফলভাবে জন্ম নেওয়া কোনো শিশুর দীর্ঘ সময় ধরে হিমায়িত ভ্রূণ হিসেবে থাকার রেকর্ড।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনের এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩৫ বছর বয়সী লিন্ডসে এবং ৩৪ বছর বয়সী টিম পিয়ার্স গত শনিবার তাদের সন্তান থ্যাডিউস ড্যানিয়েল পিয়ার্সকে জন্ম দিয়েছেন। এই বিষয়ে বিজ্ঞান সাময়িকী ‘এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ’-কে লিন্ডসে বলেছেন, ‘আমার পরিবার ভাবছে এটা যেন কোনো সায়েন্স ফিকশন সিনেমার ঘটনা!’

পিয়ার্স দম্পতি গত সাত বছর ধরে সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। শেষে তারা ১৯৯৪ সালে আইভিএফের মাধ্যমে তৈরি হওয়া একটি ভ্রূণ দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ভ্রূণটি তৈরি করেছিলেন সেই সময়ের ৩১ বছর বয়সী লিন্ডা আর্চার্ড নামে এক নারী। বর্তমানে তার বয়স ৬২ বছর।

লিন্ডা সেই সময় মোট চারটি ভ্রূণ তৈরি করেছিলেন- এর একটি থেকে জন্ম নেয় তার বর্তমান ৩০ বছর বয়সী কন্যা, আর বাকি তিনটি ভ্রূণ হিমায়িত অবস্থায়ই সংরক্ষিত ছিল।

বিবিসি জানিয়েছে, এক সময় লিন্ডা ও তার স্বামীর বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। তারপরও তিনি ওই তিনটি ভ্রূণ নষ্ট করতে বা গবেষণার জন্য দান করতে কিংবা অজানা কোনো দম্পতিকে দিতে চাননি। কারণ এই ভ্রূণ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুর সঙ্গে তার কন্যার রক্তের সম্পর্ক থাকবে- এমনটিই ছিল তার ভাবনা।

তবে ভ্রূণগুলো সংরক্ষণের জন্য প্রতি বছর হাজার হাজার ডলার ব্যয় করেছেন লিন্ডা। শেষ পর্যন্ত ‘নাইটলাইট’ নামে একটি খ্রিস্টান ভ্রূণ দত্তক সংস্থার সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। এই সংস্থাটি ‘স্নোফ্ল্যাকস’ নামে একটি বিশেষ কর্মসূচি পরিচালনা করে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে কেউ যদি ভ্রূণ দান করতে চান তবে তারা তাদের পছন্দ অনুযায়ী গ্রহীতা পরিবার নির্বাচন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দাতা দম্পতি গ্রহীতা পরিবারের ধর্ম, জাতি এবং জাতীয়তার মতো বিষয়গুলোতে নিজেদের পছন্দ জানাতে পারেন।

লিন্ডা আর্চার্ড চেয়েছিলেন একজন বিবাহিত, খ্রিস্টান, ককেশীয় দম্পতি, যারা যুক্তরাষ্ট্রেই থাকেন। এভাবেই শেষ পর্যন্ত তিনি যুক্ত হন পিয়ার্স দম্পতির সঙ্গে। পরে টেনেসি রাজ্যের ‘রিজয়েস ফার্টিলিটি’ ক্লিনিকে এই ভ্রূণ স্থানান্তরের প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়।

ভ্রূণ দত্তক নেওয়া লিন্ডসে পিয়ার্স বলেন, ‘আমরা কোনো রেকর্ড ভাঙতে চাইনি। আমরা শুধু একটি সন্তান চাইছিলাম।’

লিন্ডা আর্চার্ড জানিয়েছেন, তিনি এখনো শিশুটিকে সামনে থেকে দেখেননি। তবে ইতোমধ্যে মেয়ের সঙ্গে নবজাতকের মুখের মিল দেখতে পাচ্ছেন।

এই ঘটনা নতুন রেকর্ড গড়লেও, এর আগে ১৯৯২ সালে হিমায়িত হওয়া একটি ভ্রূণ থেকে ২০২২ সালে জন্ম নেওয়া যমজ শিশুরাই ছিল এই রেকর্ডের ধারক।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত