রাশিয়া-আমেরিকা যুদ্ধের শঙ্কা, সাগরতলে কে বেশি ক্ষমতাধর?

| আপডেট :  ০২ আগস্ট ২০২৫, ০৬:১৬  | প্রকাশিত :  ০২ আগস্ট ২০২৫, ০৬:১৬

বিশ্বের দুই পরাশক্তি রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ফের তীব্র হচ্ছে স্নায়ুযুদ্ধের আবহ। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিকে ক্রেমলিন পাত্তা না দেওয়ায়, দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা এক নতুন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই টানাপড়েনের বাস্তব প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সামরিক প্রস্তুতিতে। 

ইতোমধ্যে রাশিয়ার জলসীমার কাছাকাছি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে- সাগরের অতল তলে কে বেশি শক্তিশালী? সাবমেরিন প্রতিযোগিতায় কার রাজত্ব বেশি বিস্তৃত?

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীতে রয়েছে শক্তিশালী ওহাইও-ক্লাস ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন, যেগুলোকে ‘বুমার’ নামে ডাকা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এমন অন্তত ১৪টি সাবমেরিন রয়েছে, প্রতিটি সাবমেরিনে রাখা যায় ২০টি পর্যন্ত ট্রাইডেন্ট-২ ডি ৫ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এই সাবমেরিনগুলো সমুদ্রে দীর্ঘ ১৫ বছর পর্যন্ত বড় ধরনের মেরামত ছাড়াই টহল দিতে পারে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণাত্মক সাবমেরিন বহরেও রয়েছে বিপুল সক্ষমতা। এর মধ্যে রয়েছে ভার্জিনিয়া-ক্লাস, সিউলফ-ক্লাস ও লস অ্যাঞ্জেলেস-ক্লাস (৬৮৮ ক্লাস) সাবমেরিন। এগুলো টমাহক ও হারপুন ক্ষেপণাস্ত্র এবং এমকে-৪৮ টর্পেডো বহন করে শত্রু জাহাজ ধ্বংস, গোয়েন্দাগিরি, নজরদারি ও মাইন যুদ্ধের মতো অভিযানে ব্যবহৃত হয়।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের বহরে আছে ২৪টি ভার্জিনিয়া-ক্লাস সাবমেরিন, ৩টি সিউলফ-ক্লাস সাবমেরিন ও ২৪টি লস অ্যাঞ্জেলেস-ক্লাস সাবমেরিন। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে অন্তত ৫১টি শক্তিশালী সাবমেরিন রয়েছে। 

অন্যদিকে রাশিয়ার সাবমেরিন বহর সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বড়। দেশটির কাছে আছে প্রায় ৬৪টি সাবমেরিন, যার মধ্যে ১৪টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সাবমেরিন রয়েছে যা রাশিয়ার কৌশলগত পারমাণবিক প্রতিরক্ষার মূল স্তম্ভ। তবে রাশিয়ার সাবমেরিন সংক্রান্ত সব তথ্য খোলামেলা নয়; অনেক তথ্যই গোপন।

রাশিয়ার সবচেয়ে আধুনিক সাবমেরিন হলো বোরেই-ক্লাস এসএসবিএন। বর্তমানে আটটি বোরেই সাবমেরিন রয়েছে রুশ নৌবহরে। এছাড়া বিশ্বখ্যাত আকুলা-ক্লাস সাবমেরিন, যা ‘শার্ক’ নামেও পরিচিত, নিঃশব্দ চলাচলের জন্য বিশেষভাবে নকশা করা। এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস-ক্লাস সাবমেরিনের প্রতিদ্বন্দ্বী। পাঁচটি আকুলা-ক্লাস বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে এবং এতে ক্যালিবার, অনিক্স বা গ্রানিত ক্ষেপণাস্ত্রসহ টর্পেডো মোতায়েন থাকে।

সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, দুই দেশের সাবমেরিন ক্ষমতা শুধু প্রতিরক্ষা নয়, বরং আধিপত্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। সামুদ্রিক গভীরতা এখন যেন পরাশক্তির প্রতিযোগিতার এক নতুন মঞ্চ, যেখানে আবারও ফিরছে কোল্ড ওয়ারের ছায়া।
 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত