বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে বিনামূল্যে সবজির চারা বিতরণ

| আপডেট :  28 October 2024, 08:10  | প্রকাশিত :  28 October 2024, 08:10

কৃষকনির্ভর বাংলাদেশের প্রাণ কৃষি হলো- অনেকটাই প্রকৃতি শাসিত। প্রতি বছর প্রকৃতির রোষানলের শিকার হয় এ দেশের কৃষি ও কৃষক। খরা, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, শৈত্যপ্রবাহ ইত্যাদি আমাদের কৃষকদের চিরশত্রু। এ বছরও এর ধারাবাহিকতাকে ছাপিয়ে গেছে স্মরনকালের ভয়বহ বন্যার তাণ্ডব। ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, রংপুর, শেরপুর, নেত্রকোনাসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জের কিছু অঞ্চল। জানমালের ক্ষতির সঙ্গে ক্ষতি হয় কৃষকের ফসল এবং শীতকালীন সবজির বীজতলা।

সে বিষয়কে মাথায় রেখে দেশের একমাত্র গবেষণা ভিত্তিক বেসরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে সবজির চারা বিতরণের উদ্যোগ গ্রহন করে। উদ্যোগ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমনুরাস্থ স্থায়ী ক্যাম্পাসের গবেষণা মাঠে লাউ, বেগুন ও মরিচের চারা উৎপাদনের কাজ শুরু করে। শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পরিচর্যায় বেড়ে উঠা এসব চারা আজ বিতরণ করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রানীহাটি ও দুর্লভপুর ইউনিয়নের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় তিনশ কৃষক পরিবারের মাঝে।

এ সময় চারা বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মো. আফতাবুজ্জামান আল-ইমরান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ মো. নয়ন মিয়া, উপজেলা কৃষি অফিসার, শিবগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযগিতায় সবজির চারা বিতরণের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিবিদ ড. মো. সাহেব আলী প্রামাণিক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত), এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশকে ভূয়সী প্রশংসা করেন। বানভাসি মানুষের জন্য সবজির চারা উৎপাদন এবং বিনামূল্যে বিতরণের যে উদ্যোগ এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ নিয়েছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমরা তাদের এই সুন্দর জনকল্যাণমূলক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। যারা এই মহতি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিশেষ করে- বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমরা সবসময় আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় পাশে আছি।

বিশেষ অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকেনো প্রয়োজনে আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সর্বদা আপনাদের পাশে থাকব এবং এই সুন্দর কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. সাহেব আলী প্রামাণিক তার বক্তব্যে বলেন, এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ দেশের একমাত্র গবেষণাধর্মী বেসরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশের বিশেষ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গবেষণা এবং শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা সর্বদা আপনাদের পাশে আছি। কারণ এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আপামর মানুষের কল্যানের জন্য। এখানে যাতে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছেলেমেয়েরা অল্প খরচে বিশ্বমানের শিক্ষা পায়। আমরা আমাদের কোয়ালিটি ধরে রেখে শিক্ষা এবং গবেষণার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর। কৃষি বিষয়ক যেকোনো সমস্যা সমাধানে আমরা সর্বদা সচেষ্ট। তিনি তার বক্তব্যে সার্বিক সহযোগিতার জন্য উপজেলা প্রশাসন এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং সকল সাংবাদিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। উল্লেখ্য যে, কিছুদিন আগে এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ রাস্তার পাশে এক হাজারের বেশি তালবীজ রোপণ কর্মসূচিও গ্রহণ করেছিল। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত