প্রতিটি সেক্টরে শেখ হাসিনার লুটপাটের গুপ্তধন আছে : রিজভী
দেশের প্রতিটি সেক্টরে, প্রতিটি জায়গায় ক্ষমতাচ্যুত ‘স্বৈরাচার’ শেখ হাসিনার লুটপাটের গুপ্তধন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি ঠিকমতো ড্রাইভ দিতে পারে, তাহলে এই গুপ্তধনের সন্ধান পাওয়া যাবে। শেখ হাসিনার গুপ্তধনের সন্ধান তখন দেশের জনগণ জানতে পারবে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব চত্বরে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) বার্ষিক সাধারণ সভায় রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ-নাৎসিবাদের প্রথম টার্গেট হচ্ছে গণমাধ্যম এবং সাংবাদিক। ডিক্টেটররা কখনো এই চতুর্থ স্তম্ভ মেনে নিতে পারে না। সেজন্য প্রথমে এখানেই ধাক্কা দেয়। অনেক সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করেছে, অনেক পত্রিকা-টেলিভিশন বন্ধ করে দিয়েছে। যাতে তারা (আওয়ামী লীগ) অন্যায়-অবিচার, দুর্নীতি, বিদেশে টাকা পাচার করলে তাদের তথ্য ফাঁস না হয়। প্রতিটি সেক্টরে প্রতিটি জায়গায় শেখ হাসিনার লুটপাটের গুপ্তধন আছে।
রিজভী বলেন, জাতীয় প্রেস ক্লাবকে গণতন্ত্রকামী মানুষের আশ্রয়ের জায়গা মনে করা হতো। প্রেস ক্লাব ছিল সব সময়, সব যুগে ন্যায়ের পক্ষে যারা কথা বলতো, সরকারের জুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতো, তাদের আশ্রয়স্থল। ক্রমান্বয়ে ফ্যাসিবাদের থাবা যখন ইউনিয়ন থেকে শুরু করে সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়লো, তখন জাতীয় প্রেস ক্লাবও যেন সেই থাবার হাত থেকে বাঁচতে পারলো না। এই প্রেস ক্লাব থেকে আমাদের দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আটক করা হয়েছিল। তার আটকের পেছনে একজন সিনিয়র সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরীর ভূমিকা ছিল। তিনি পুলিশ ডেকে নিয়ে এসে মহাসচিবকে ধরিয়ে দিলেন। তবে অনেক সাংবাদিক ন্যায়ের পথে ছিল, গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে ছিল।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, জাতীয় প্রেস ক্লাব, যে জায়গাটি ছিল গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে আশ্রয়স্থল, ন্যায়ের পক্ষে কথা বলার জায়গা; আমরা আশির দশকেও দেখেছি- ন্যায়ের পক্ষে ছিল প্রেস ক্লাব। কিন্তু এই ক্লাবেও ফ্যাসিবাদের থাবা তৈরি হয়েছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলন যখন চরম পর্যায়ে, তখনও টেলিভিশনের টকশোতে দেখেছি, শ্যামল দত্ত বলেছেন- এরা (ছাত্ররা) ভুল পথে যাচ্ছে। টাকা দিয়ে তাদেরকে ভুল পথে পরিচালনা করছে। এ ধরনের মিথ্যাচার করে জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন এবং ছোট বাচ্চাদের রক্তস্নানকে যারা কলুষিত করার চেষ্টা করেছে, তারা কি সভ্য মানুষ হতে পারে?
তিনি বলেন, দেশে অনেক টেলিভিশন ছিল, পত্রিকা ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা বাকশালকে এমন একটি নতুন রূপ দিয়েছিলেন যে- সবকিছু থাকবে, কিন্তু কথা বলবে একজন এবং একজনের কথাই প্রচার করা হবে। এটা ছিল শেখ হাসিনার মূল লক্ষ্য এবং তিনি সেভাবে কাজ করেছেন। ৭৫-এর বাকশালকে তিনি (শেখ হাসিনা) নতুন রূপে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন।
অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান, দিদারুল আলম ও খন্দকার আলমগীর হোসেনের যৌথ সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারেওয়ার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আব্দুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল, সাংবাদিক নেতা এম. আব্দুল্লাহ, কাদের গণি চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম, খোরশেদ আলম, বাছির জামাল প্রমুখ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত