ওয়ানডে অধ্যায়ের ইতি টানলেন মুশফিক

| আপডেট :  ০৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৫১  | প্রকাশিত :  ০৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৫১

বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, মুশফিকুর রহিম, বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে বিদায় নিলেন। ১৯ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার শেষে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি আবেগঘন বার্তায় অবসরের ঘোষণা দেন।

‘আলহামদুলিল্লাহ, যখনই দেশের হয়ে মাঠে নেমেছি, শতভাগের বেশি দেওয়ার চেষ্টা করেছি,’—এমনই অনুভূতির কথা জানিয়ে মুশফিক নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই ঘোষণা দেন। কালবেলার পাঠকদের জন্য স্টাটাসটি হুবুহ তুলে ধরা হলো,  

‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

আমি আজ থেকে একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছি।

আলহামদুলিল্লাহ সবকিছুর জন্য। যদিও বৈশ্বিক পর্যায়ে আমাদের অর্জন সীমিত ছিল, তবে এক বিষয় নিশ্চিত— যখনই আমি দেশের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছি, শতভাগেরও বেশি উজাড় করে দিয়েছি, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে।

গত কয়েক সপ্তাহ আমার জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল, এবং আমি বুঝতে পেরেছি এটাই আমার নিয়তি।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআনে বলেছেন:

“তুমি যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করো এবং যাকে ইচ্ছা অপমান করো।“ (সূরা আল ইমরান ৩:২৬)

পরম করুণাময় আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের সকলকে সঠিক ঈমান দান করুন।

পরিশেষে, আমি আমার পরিবার, বন্ধু এবং সেইসব ভক্তদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, যাদের ভালোবাসা ও সমর্থন নিয়ে আমি ১৯ বছর ধরে ক্রিকেট খেলেছি।

জাজাকাল্লাহু খাইর।

এক বিস্ময়কর ক্যারিয়ারের গল্প

২০০৫ সালে টেস্ট ও পরের বছর ওয়ানডে অভিষেকের পর থেকেই মুশফিক বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক নির্ভরযোগ্য নাম হয়ে ওঠেন। ব্যাট হাতে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স, দলের জন্য অগণিত ম্যাচ জেতানো ইনিংস, উইকেটের পেছনে ক্ষিপ্র দক্ষতা—সব মিলিয়ে তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল ক্রিকেটার।

বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেছেন তিনি। এছাড়া, তিনি টেস্টে বাংলাদেশের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক। ২০১৪ সালে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে।

মুশফিকুর রহিম শুধু একজন ক্রিকেটার নন, তিনি ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের হৃদয়। তার উপস্থিতি মানেই ছিল এক ভরসার প্রতীক। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার যে মানসিকতা, তা বিরল। শুধু ব্যাটিং নয়, উইকেটের পেছনে তার দক্ষতাও ছিল অতুলনীয়।

তার বিদায়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রিকেট এক মহীরুহকে হারালো। তবে, তার স্মরণীয় ইনিংসগুলো, তার লড়াকু মানসিকতা, এবং দলের প্রতি তার অবিচল আনুগত্য ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে।

তার বিদায়ী বার্তায় তিনি পরিবার, বন্ধু ও ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, যারা দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে তাকে সমর্থন করেছেন।

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। বিদায়, মুশফিক!

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত