আমাদের মধ্যে এখনো আতঙ্ক কাজ করে : তৌসিফ মাহবুব

| আপডেট :  ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০৩  | প্রকাশিত :  ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ০২:০৩

১৭ বছর আগে ময়মনসিংহের একটি পরিবারের ৯ সদস্য ‘আত্মহত্যা’ করে, যা সেসময় দেশজুড়ে আলোড়ন তোলে। সেই ঘটনা থেকে প্রেরণা নিয়ে সিরিজ তৈরি করেছেন নির্মাতা ভিকি জাহেদ। নাম ‘চক্র’। এটি মুক্তি পেয়েছে ১০ অক্টোবর। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব ও তাসনিয়া ফারিণ। সিরিজটিতে কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে তৌসিফ কথা বলেছেন কালবেলার সঙ্গে। লিখেছেন আহসান হাবীব

‘চক্র’ আপনার প্রথম ওটিটি কনটেন্ট। কেমন সাড়া পাচ্ছেন? যে প্রত্যাশা ছিল, তা পূরণ হবে বলে মনে হয়?

তৌসিফ : আলহামদুলিল্লাহ ভালো সাড়া পাচ্ছি। আর এটি তিন বছর আগের নির্মিত কনটেন্ট। প্রথমে এটি টিভি নাটক হিসেবে আসার কথা ছিল; কিন্তু পরে প্ল্যান পরিবর্তন হয়ে ওয়েব সিরিজ আকারে মুক্তি পেল। তবে ভেতরে একটি ভয় ছিল যে—টিভি কনটেন্ট ওটিটিতে আসছে দর্শকরা যেন কীভাবে গ্রহণ করেন। নাহ, আলহামদুলিল্লাহ দর্শকরা ভালোভাবেই গ্রহণ করেছেন। কারণ সিরিজটি নির্মাণ করেছেন দেশের অন্যতম মেধাবী নির্মাতা ভিকি জাহেদ। তার ওপর দর্শকদের আস্থা আছে।

চক্র ওয়েব সিরিজটি করতে গিয়ে কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে; বিষয়টি নিয়ে জানতে চাই…

তৌসিফ : এ ওয়েব সিরিজে অভিনয় করতে অনেক অস্বাভাবিক বিষয় আমাদের সঙ্গে ঘটেছে, যেগুলোর মধ্যে একটি আমি বলতে চাই। সেটি হলো, এ ওয়েব সিরিজের টিমে আমরা ৩০ থেকে ৪০ জন ছিলাম, যাদের মধ্যে চারজনই মারা যান ওয়েব সিরিজের শুটিং চলাকালীন দীর্ঘসময়ে, যা আমাদের এখনো অবাক লাগে। এ কাজটি করতে গিয়ে আমরা বেশকিছু সমস্যার সম্মুখীন হই। সেগুলোর মধ্যে প্রথম যে বিষয়টি ঘটে তা হচ্ছে, শুটিং শুরুর দুদিনের মাথায় আমাদের নির্মাতার খালু মারা যান, যিনি নির্মাতার খুবই কাছের ছিলেন, যে কারণে শুটিং বন্ধ করে দিতে হয়। এরপর আমরা আরও দুদিন শুটিং করি। তারপর আমাদের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটে, তা সবাইকে অবাক করে। ঘটনাটি হচ্ছে—আমাদের এই সিরিজে একটি দাদির চরিত্র ছিল, যিনি চার দিনের শুটিং করে মারা যান, যেই ঘটনা আমাদের সবাইকে ভয় ধরিয়ে দেয়। এরপর দাদি চরিত্রের জন্য আরেকজনকে নেওয়া হয়, যাকে দিয়ে গোটা সিরিজের শুটিং সম্পন্ন হয়। কিন্তু শুটিং শেষ হওয়ার কিছুদিন পর শুনি তিনিও মারা গেছেন। মৃত্যু ছাড়াও অনেক ঘটনাই এই সিরিজের শুটিং সেটে ঘটেছে। কাজটি শেষ হলেও আমাদের মধ্যে এখনো আতঙ্ক কাজ করে। তাই দর্শকদের বলব, কাজটি করতে আমাদের অনেক ঝুঁকি নিতে হয়েছে। তাই আপনারা দেখলেই আমরা আমাদের সব কষ্ট ভুলে যেতে পারব।

সিজন টু আসবে এমন একটি বার্তা সিজন ওয়ানে পাওয়া গেছে। কোনটা বেশি ভয়ংকর?

তৌসিফ : এক কথায় যদি বলি তাহলে সিজন ওয়ান আসলে ট্রেলার। আসল ঘটনা সিজন টুতে দেখানো হবে। তাই যারা প্রথম সিজন দেখে ভয় পাচ্ছেন তাদের বলব, সিজন টুয়ের জন্য সাহস ধরে রাখুন। কারণ দ্বিতীয় সিজনে যা ঘটতে যাচ্ছে, তা আপনাদের কল্পনাতেও নেই।

চক্র ওয়েব সিরিজের সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?

তৌসিফ: আমার ও ভিকির সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ। আমরা কাজের বাইরেও অনেক বিষয়ে কথা বলি। সেই জায়গা থেকে ২০১৭ সালে ‘আদম’ পরিবার নিয়ে ভিকি আমার সঙ্গে কথা বলেন। তখন তিনি জানান, যেহেতু এই পরিবারের ঘটনা অনেক বড়, তাই এক পর্বের নাটকে এটি হবে না। তখন আমি তাকে বলি, আচ্ছা ঠিক আছে, তাহলে আমরা যদি কখনো সিনেমা বানাই তখন করব। অবশ্য ২০১৭-এর দিকে তখন ওয়েব সিরিজের প্রচলন তেমন আসেনি। তাই ওয়েব সিরিজ বানানোর চিন্তা আসেনি। এরপর যখন ভিকি কিছু ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করেন, তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিই এটি ওয়েব সিরিজ আকারে আনব।

তাসনিয়া ফারিণের সঙ্গে কাজ করতে কেমন লেগেছে?

তৌসিফ: ফারিণের সঙ্গে এর আগেও আমি অনেক কাজ করেছি। তবে এ কাজটি করতে গিয়ে ও আমাকে খুব জ্বালিয়েছে। কারণ যখন শুটিং সেটে ঘটনাগুলো ঘটছিল, তখন ও খুবই চিন্তিত থাকত আবার আমাদের সঙ্গে এমনটি ঘটবে কি না। এ ছাড়া সিরিজটি মুক্তির পর দর্শকদের সঙ্গে জানি আবার কী হয়, এসব নিয়ে। তবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর পর ফারিণের মাথায় কিছুই থাকে না। ও একজন পরিপূর্ণ আর্টিস্ট।

আপনার সমসাময়িক অনেকে ওটিটি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন, এ জায়গায় আপনি দেরিতে যুক্ত হলেন, কারণ কী?

তৌসিফ: আমি ওটিটি নিয়ে কখনো প্ল্যান করিনি। নাটক নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চাইছিলাম। কারণ ওটিটি অনেক বড় ব্যাপার। তাই আমি অপেক্ষো করছিলাম কবে ভালো অভিনেতা হতে পারব, তারপর ওটিটিতে কাজ করব। সেই জায়গা থেকেই এত দেরি। তবে হ্যাঁ, আমি এখনো অভিনয় শিখছি।

কলকাতার ওটিটির চেয়ে বাংলাদেশের ওটিটির কাজের মান এগিয়ে যাচ্ছে। আপনি কী বলবেন?

তৌসিফ : আমি এখনো কলকাতার ওটিটির কাজগুলো সেভাবে দেখিনি। তাই বলতে পারছি না। বাংলাদেশের কাজ দেখা হয়েছে অনেক। সে জায়গা থেকে বলব আমরা ভালো করছি।

গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে আপনি একটি সিনেমার শুটিং শেষ করেছেন, এ বিষয়ে জানতে চাই?

তৌসিফ : নাহ, এমন কোনো খবর আমার কাছে নেই। আমি কোনো সিনেমায় নাম লেখাইনি। কারণ আমার মনে হয়েছে, বড় পর্দায় কাজ করার মতো সময় আমার এখনো হয়নি।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত