টেলিকম খাতের দুর্নীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি

| আপডেট :  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৮  | প্রকাশিত :  ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৮

বিদ্যুৎ ও অন্যান্য খাতের মতো টেলিকম খাতেও নীরবে লুটপাট চালানো হয়েছে। বেশ কিছু কোম্পানিকে সব লেয়ারে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, যার ফলে বাজারে প্রতিযোগিতা খর্ব করা হয়েছে। 

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা খাতে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। 

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালেদ আবু নাসের, আইএসপিএবি’র সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালেদ আবু নাসের, আইআইজিবি সভাপতি আমিনুল হাকিম, বেসিস সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর, রবি’র সিনিয়র ডিরেক্টর অনামিকা ভক্ত, গ্রামীণফোনের হোসেন সাদাত, এমটব এর হেড অব কমিউনিকেশন আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টেলিকম বিশেষজ্ঞ মুস্তাফা মাহমুদ হুসাইন।

ইশরাক হোসেন বলেন, বিগত সরকার টেলিকম খাতকে লুটপাটের ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। এ সময় টেলিকম খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি তোলেন তিনি। বিগত সরকারের সময়ে বিটিআরসির ভূমিকার সমালোচনা করে সংস্থাটিকে স্বাধীন কমিশন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। 

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপির ৩৩ দফার মধ্যে ৯ম দফায় সকল সংবিধিবদ্ধ ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনভাবে কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়া কাজ করতে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সে হিসেবে বিটিআরসি এখন পর্যন্ত রেগুলেট করে ব্যারিয়ার সৃষ্টি করছে। লাইসেন্সিং দেওয়ার ক্ষেত্রে ৭-৮টি লেয়ার তৈরি করেছে। এটা রিফর্ম করতে হবে। অবকাঠামো শেয়ারের জন্য বাস্তবভিত্তিক উদ্যোগ নিতে হবে। দেশীয় প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষায় আমাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। 

সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক বলেন, বিটিআরসিতে যারা ছিলেন তারা রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। যার ফলে ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। যেসব কোম্পানির ভিন্ন ভিন্ন প্রায় সবকটি লেয়ারে লাইসেন্স ছিল, তারা প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা খর্ব করেছে। একই কোম্পানিকে সব লেয়ারে লাইসেন্স দেওয়া কোনোভাবেই উচিত নয়। এতে মিডিয়াম ও ছোট অপারেটররা ব্যবসা করতে পারিনি। 

তিনি বলেন, এখন মোবাইল অপারেটররা ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায় আসতে চাচ্ছে। এটি কোনোভাবেই উচিত হবে না। আমরা আইএসপি অপারেটররা তা মেনে নেবো না। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে আইএসপিএবি এমভিএনও হয়ে মোবাইল সার্ভিস দেয়। সরকার এটি নিয়ে ভাবতে পারে। বিটিআরসিতে ক্যারিয়ারে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।

খালেদ আবু নাসের বলেন, বর্তমানে আইএসপিগুলো অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়েছে। তাদের সুরক্ষা করা বিটিআরসি’র দায়িত্ব। বিদ্যমান লাইসেন্সধারীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, বাজার যেন একচেটিয়া না হয় সেজন্য উদ্যোগ নিতে হবে।

বিডি জবসের সিইও ফাহিম মাশরুর বলেন, ব্যাংক খাতের মতো টেলিকম খাতেও দুর্নীতি হয়েছে। বাংলাদেশের আদানি কারা তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু বলি না। তিনি বলেন, স্টার্টলিংক বাংলাদেশে আসবে ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায়। যেহেতু স্টার্লিংক সরকারকে এত ট্যাক্স দিয়ে আসবে না এবং তাদেরকে ছাড় দিতে হবে, সেহেতু লোকাল প্রোভাইডারদের একই ধরনের ছাড়ের দাবি তুলতে হবে। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত