৪০০’র দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে কেন থেমে গেলেন মুল্ডার?
ক্রিকেট বিশ্ব যখন অপেক্ষায় ছিল নতুন ইতিহাসের, ঠিক তখনই ঘটল অভাবনীয় এক সিদ্ধান্ত। দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কত্বের ভার সাময়িকভাবে কাঁধে নিয়ে উইয়ান মুল্ডার পৌঁছে গিয়েছিলেন এক কিংবদন্তি মাইলফলকের একদম কিনারায়। দ্বিতীয় টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়েতে যখন লাঞ্চ ব্রেকে তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ৩৬৭*, সবাই ধরে নিয়েছিল ইতিহাস এখন কেবল সময়ের অপেক্ষা।
কিন্তু দ্বিতীয় সেশনে ব্যাট হাতে আর নামেননি মুল্ডার। বরং সবাইকে চমকে দিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে দেন। স্বপ্ন ভাঙে ৪০০ পার হওয়ার, নতুন রেকর্ড গড়ার। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে বিস্ময় আর হতাশার ঢেউ। ডেল স্টেইন থেকে তাবরিজ শামসিও মত দেন, মাল্ডার চাইলেই লারাকে টপকে যেতে পারতেন।
তবে দিনের খেলা শেষে মুল্ডার নিজেই জানালেন তার মনের কথা, ‘প্রথমত, আমি মনে করেছিলাম আমরা যথেষ্ট রান করে ফেলেছি, তাই এখন আমাদের বোলিংয়ে মন দেওয়া উচিত। দ্বিতীয়ত, ব্রায়ান লারা একজন কিংবদন্তি। বাস্তবিক অর্থেই তিনি ডিসার্ভ করেন এই রেকর্ডটা নিজের কাছে রাখার।’
তিনি আরও বলেন, ‘৪০০ রান করেছিলেন লারা, সেটাও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ওনার মতো একজন খেলোয়াড়ের এমন একটা রেকর্ড ধরে রাখা সত্যিই বিশেষ কিছু। যদি আবার কখনও এমন সুযোগ পাই, আমি হয়তো একই সিদ্ধান্ত নেব। হেড কোচ শুকরি কনরাডও বলেছিলেন—‘লিজেন্ডদের জন্য বড় রেকর্ডগুলো থাকুক।’ আমি সেটাই করেছি।’
২৭ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল ৪০০’র গণ্ডি পেরিয়ে যাওয়া শুধুই সময়ের ব্যাপার। কিন্তু দলীয় স্বার্থে ব্যক্তিগত গৌরবকে ত্যাগ করে মুল্ডার দেখালেন, ক্রিকেট এখনও জেন্টেলম্যানদের খেলা।
ব্রায়ান লারার ৪০০* ইনিংসটি ছিল ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ হিসেবে যা আজও অক্ষুণ্ন। মুল্ডারের সিদ্ধান্ত হয়তো তাকে সেই তালিকার শীর্ষে তুলল না, কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে জায়গা করে নিল অন্য এক উচ্চতায়—নেতৃত্ব, শ্রদ্ধা আর আত্মত্যাগের প্রতীক হিসেবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত