নড়াইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন বহিষ্কার
নড়াইলে শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দলীয় আদর্শপরিপন্থি আচরণের জন্য করা শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে জবাব সন্তোষজনক হওয়ায় অন্য দুই নেতাকে তাদের পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। পৃথক দুটি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সোমবার (০৭ জুলাই) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার সদস্য সচিব শাফায়াত উল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বহিষ্কৃত ওই নেতার নাম রাশেদুল ইসলাম মামুন। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক। অন্যদিকে, পদে পুনর্বহাল হওয়া দুই নেতা হলেন জেলা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রহমান মেহেদী ও আমিরুল ইসলাম রানা।
এর আগে গত ৩ জুলাই ওই চিঠি ইস্যু করা হয়। রোববার (০৬ জুলাই) রাতে চিঠিটি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। শাফায়াত উল্লাহ বলেন, ‘তিনজনকে শোকজ করা হয়েছিল। দুজনের জবাব সন্তোষজনক হওয়ায় তাদের পুনর্বহাল এবং একজনের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম মামুন সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তার বিরুদ্ধে কমিটির পক্ষ থেকে গঠনতন্ত্রবিরোধী কার্যক্রম, শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলীয় আদর্শপরিপন্থি আচরণের অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। ওই অভিযোগগুলো প্রাথমিকভাবে পর্যালোচনা সাপেক্ষে, কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে তাকে বহিষ্কার করা হলো।
আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগে কিছু সাংগঠনিক অসংগতি এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গজনিত কারণে কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নড়াইল জেলা শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রহমান মেহেদী এবং আমিরুল ইসলাম রানাকে শোকজ করা হয়েছিল। পরে তাদের দুঃখ প্রকাশ, সংগঠনের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ এবং ভবিষ্যতে গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলার অনুসরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার অঙ্গীকারের পরিপ্রেক্ষিতে, কমিটির এক জরুরি সভায় প্রাপ্ত সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই দুই সদস্যকে সাধারণ ক্ষমা করা হলো এবং আগের পদে পুনর্বহাল করা হলো।
বহিষ্কৃত নেতা রাশেদুল ইসলাম মামুন বলেন, ‘আমাকে বহিষ্কার নোটিশ ফেসবুকে দেখেছি। তবে আমার হাতে আসেনি। আমি আপিল করব। আশা করছি, তারা এ আদেশ প্রত্যাহার করে নেবেন।’
সংগঠনটির নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, গত ৬ জুন সংগঠনের ফেসবুক পেজে জেলা প্রশাসককে উদ্দেশ্য করে একটি পোস্ট দেন সংগঠনটির যুগ্ম সদস্য সচিব মো. আব্দুর রহমান মেহেদী। পোস্টে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একটি ছবি সংযুক্ত করে প্রশাসনকে শহীদ, আহত ও সাধারণ মানুষের প্রতি আরও যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান। ওই পোস্টটি পরে আরেক যুগ্ম সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম মুছে ফেলেন। এ নিয়ে মেসেঞ্জার গ্রুপে দুজনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর ৮ জুন সিনিয়র নেতারা মীমাংসার চেষ্টা করলেও তারা সাড়া দেননি।
পরদিন ৯ জুন নড়াইল শহরের পুরাতন বাস টার্মিনালে যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রহমান মেহেদী ও আমিরুল ইসলামের পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আমিরুল ইসলামের পক্ষ নিয়ে মারামারিতে অংশ নেন রাশেদুল ইসলাম মামুন। এ মারামারিতে দুই-তিনজন আহত হন। ১১ জুন এ ঘটনায় সংগঠনটির তিন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয় সংগঠনের পক্ষ থেকে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত