মাইক্রোপ্লাস্টিক মিশে গেছে মানবদেহেও, বৈশ্বিক চুক্তি হবে কি?
বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান প্লাস্টিক দূষণ এখন আর শুধু পরিবেশগত সংকট নয়, এটি সরাসরি মানবস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে। প্লাস্টিকের অতিক্ষুদ্র কণা, অর্থাৎ মাইক্রোপ্লাস্টিক, এখন মানুষের শরীরেও পাওয়া যাচ্ছে— যা চরম উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের উদ্যোগে জেনেভায় মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) শুরু হয়েছে প্লাস্টিক দূষণবিরোধী বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক চুক্তির জন্য ১০ দিনের আলোচনা। খবর এএফপির।
এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে এ নিয়ে আলোচনা ব্যর্থ হলেও এবার নতুন করে চুক্তির আশা করছে দেশগুলো।
জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) জানায়, প্লাস্টিক দূষণ এতটাই ব্যাপক যে, মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা পাওয়া যাচ্ছে হিমালয়ের শীর্ষ থেকে শুরু করে সাগরের গভীর তলদেশে এবং এমনকি মানবদেহের প্রায় প্রতিটি অংশেও। এই বৈশ্বিক উদ্বেগ থেকেই আলোচনা পুনরায় শুরু হয়েছে।
ইউএনইপি প্রধান ইঙ্গার অ্যান্ডারসেন বলেন, বুসানের পর থেকে বিভিন্ন দেশ ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছে। আমি অনেক দেশের কাছেই শুনেছি, ‘আমরা জেনেভায় এসেছি একটি চুক্তি করতে’। এটি সহজ হবে না, কিন্তু সম্ভব।
তবে এই চুক্তির মূল অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে প্লাস্টিক উৎপাদন সীমা ও ক্ষতিকর রাসায়নিক নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে দেশগুলোর মধ্যে মতভেদ।
তেল উৎপাদনকারী দেশগুলো শুধু বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে চাইলেও, বেশ কিছু দেশ চায় উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ ও রাসায়নিক বন্ধে বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ।
আলোচনার সভাপতি, ইকুয়েডরের কূটনীতিক লুইস ভায়াস ভালদিভিয়েসো বলেন, পথ ভিন্ন হলেও আমাদের গন্তব্য এক— একটি প্লাস্টিক দূষণমুক্ত বিশ্ব।
এই আলোচনায় ৬০০-এর বেশি বেসরকারি সংগঠন অংশ নিচ্ছে, যারা বিশেষ করে মাইক্রোপ্লাস্টিক ও রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে সরাসরি মত তুলে ধরছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময় এখনই। কারণ যদি এখনই বিশ্ব একটি কার্যকর চুক্তির মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি এক ভয়াবহ স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত সংকট হয়ে দাঁড়াবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত