আঘাত, লাল কার্ড, বিদায়—সব পেছনে ফেলে সেমিতে পিএসজি
চোট, লাল কার্ড আর কিংবদন্তির বিদায়—সব মিলিয়ে এক অস্থির, নাটকীয় রাত ছিল এটি। কিন্তু সব বাধা পেরিয়ে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) প্রমাণ করে দিল, তারা এখন শুধু তারকায় ভরসা রাখা দল নয়—চ্যালেঞ্জ নিতে জানে, জিততেও জানে।
ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে শক্তিশালী বায়ার্ন মিউনিখকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে পিএসজি, তাও আবার ৯ জন নিয়ে। আর এই হারে শেষ হয়েছে বায়ার্ন কিংবদন্তি টমাস মুলারের বায়ার্ন অধ্যায়। পিএসজির বিপক্ষে হারের ম্যাচই তার লাল-সাদাদের জার্সিতে শেষ ম্যাচ ছিল।
ম্যাচের প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে দেখা যায় এক হৃদয়বিদারক মুহূর্ত। বলের দখল নিতে গিয়ে পিএসজি গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মার সঙ্গে ধাক্কা লেগে ভয়াবহ চোট পান বায়ার্নের তরুণ তারকা জামাল মুসিয়ালা। মাঠেই তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে স্ট্রেচারে তুলে নেওয়া হয়।
এরপর ম্যাচের ৭৮তম মিনিটে পিএসজিকে এগিয়ে দেন ১৯ বছর বয়সী মিডফিল্ডার দেজিরে দুয়ে। হ্যারি কেইনের কাছ থেকে বল কাড়েন জোয়াও নেভেস, তারপর ডি-বক্সের বাইরে থেকে দুএর বাঁ পায়ের শট ঠেকাতে ব্যর্থ হন মানুয়েল নয়্যার।
এরপর ম্যাচ জমে উঠে যখন ৮২ মিনিটে উইলিয়ান পাচো ও ইনজুরি টাইমে লুকাস হার্নান্দেজ লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। নয়জনের দলে পরিণত হয় পিএসজি, কিন্তু একচুলও পিছিয়ে যায়নি তারা। বায়ার্ন একাধিকবার গোল করেও অফসাইডের ফাঁদে পড়ে। শেষদিকে পাওয়া পেনাল্টিও বাতিল হয় ভিডিও রিভিউতে।
শেষদিকে যখন বায়ার্ন গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে, তখন অতিরিক্ত সময়ে কাউন্টার অ্যাটাকে ওসমান ডেম্বেলে করেন দ্বিতীয় গোলটি। নিশ্চিত করেন ফরাসি ক্লাবটির সেমিফাইনালের টিকিট।
এদিকে মুসিয়ালার ইনজুরিতে অবদান রাখা দোন্নারুম্মার চোখে পানি, মাঠে নেমে আসে নীরবতা। দ্বিতীয়ার্ধে বারবার দুয়ো শুনতে হয় তাকে।
এই হারের মধ্য দিয়ে শেষ হলো থমাস মুলারের ১৬ বছরের বায়ার্ন ক্যারিয়ার। ক্লাবটির ইতিহাসে অন্যতম সফল খেলোয়াড় হয়েও, শেষ ম্যাচে তাকে মাঠ ছাড়তে হলো পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে।
পিএসজি এখন ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। প্রতিপক্ষ হবে রিয়াল মাদ্রিদ অথবা বুরুসিয়া ডর্টমুন্ড। তবে এই রাতের গল্প আরও দীর্ঘদিন বলা হবে—নয়জনের এক অদম্য লড়াই, একটি ঐতিহাসিক জয়, আর এক কিংবদন্তির বিদায়ী বেদনা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত